সূফীবাদ বা আত্মদর্শণমূলক বিদ্যা কোনো ইজম বা দল নয়, এটা বংশগতও নয়, এটা কোনো সার্টিফিকেট নয়, এটা কেনাবেচা হয়না, এটা উত্তরাধিকারী সূত্রে পাওয়া যায়না বরং অর্জন করতে হয়।
সুফিবাদি দর্শণ বা আত্মদর্শণ হলো আত্মার জাগরণ তথা নিজেকে জানা। আরো সহজ করে বলতে গেলে, যে আমার ভেতরে থাকলে নিজেকে ‘আমি’ বলতে পারি, আর না থাকলে আর নিজেকে ‘আমি’ বলা যায়না, আমি হয়ে যায় আমার মৃতদেহ বা লাশ। সেই আমি’কে চিনতে পারার জ্ঞান এবং উপায় হচ্ছে সুফিবাদ বা সুফিইসম। (কেবল আমি’কে জানাই শেষ নয়, আমি’কে জেনে তাকে ষড় ঋপু থেকে নিয়ন্ত্রণ করা , নিজেকে স্রষ্টা তথা দয়ালের ইচ্ছার কাছে সমর্পণ করা এবং সে অনুযায়ী দিক্ষা প্রসারণ করা) আর তাই এটা গুরুমূখি বিদ্যা যা বংশ বা আওলাদ হিসাবে অর্জিত হয়না, গুরুর সান্নিদ্ধ্যে থেকে অর্জন করতে হয়। এটা সার্টিফিকেট দিয়ে প্রমাণ করা যায়না, তবে গুরু চাইলে তার শিষ্যকে সার্টিফিকেট দিতে পারে এবং তা একের অধিক বা অসংখ্য শিষ্যকে প্রদান করতে পারে।
এটা মূলত গুরুর নুরী আওলাদ তথা গুরুর থেকে পাওয়া নূর/জ্ঞান/আলো। যেই আলো পাবার পর তা নিজের ভেতর আটকে না রেখে সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার নামই হলো সূফীবাদ বা রিসালাত।
আর গুরু তার শিষ্য বা খলিফার মাঝে তখনই সার্টিফিকেট দেন, যখন তিনি বুঝতে পারেন যে, শিষ্য তার ভেতরকার খান্নাস তথা শয়তানকে আত্মসমর্পণ করাতে অর্থাৎ মুসলমান বানাতে পেরেছে, নিজের ভেতরের সকল প্রকার অহংকার, হিংসা-প্রতিহিংসা, লোভ, ভয়, হতাশা, পরশ্রিকাতরতা, হঠতা, ষড়যন্ত্র পরায়নতা এবং কলুষতা দূর করতে পেরেছে। উদারতা, নম্রতা ও ভালোবাসা দিয়ে জগতের সকল সৃষ্টিকে আপন ভাবতে পেরেছে। জাগতিক সম্পদ বা দেহের উর্ধে অন্তরের সাথে অন্তরের প্রেমের বন্ধন তৈরী করতে পেরেছে।
কেননা জগত সৃষ্টির মূলে ত আসলে প্রেম। তাই প্রবাদ আছে, জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর। অর্থাৎ এক ঈশ্বর মহা অনু বা পরমাত্মা থেকে সকল পরমাণু বা জীবাত্মার সৃষ্টি। তাই কাউকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নাই। কারন, কাউকে কটাক্ষ করলে বা ছোট করলে যে পরমাত্মাকেই ছোট করা হয়।
আমদের সকলকে দয়াল সঠিক জ্ঞানে জ্ঞানান্নিত করুক। আমিন…।